নিম পাতার ২০ টি উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় হলো নিম পাতার ২০ উপকারিতা সম্পর্কে। আপনি হয়তো নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল সঠিক কোন ফলাফল খুঁজে পাননি। তাহলে চিন্তার কিছু নেই আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই।
এই আর্টিকেলের মধ্যে আমরা বিস্তারিতভাবে নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে তথ্যমূলক আলোচনা করেছি। আপনি যদি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র: নিম পাতার ২০ টি উপকারিতা সম্পর্কে
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা ওষুধি উপাদান হিসেবে অধিক পরিচিত। সেই প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা কে মানুষ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সহায়তায় ব্যবহার করে আসছে। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, চীন, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার সহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে নিমগাছ দেখা যায়।। নিম গাছের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। নিম গাছের শিকড় থেকে শুরু করে মূল কাণ্ড ও পাতা সবকিছুই ব্যবহার করা যায়। অনেক মানুষই বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি প্রতিরোধ করতে নিম পাতার ব্যবহার করে থাকেন। প্রাচীনকালে যখন কোন ওষুধ পত্র ছিল না তখন নিম পাতাকেই মানুষজন বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করতেন।
এবং উত্তম ফলাফল লাভ করতেন। নিম পাতার মধ্যে প্রাকৃতিক নানা উপাদান রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। নিম পাতা ত্বকে ব্যবহার করলে চর্ম রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। নিম পাতার রস আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আজকে আমরা আলোচনা করব নিম পাতার প্রাকৃতিক গুনাগুন ও নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে।
আপনি যদি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার জন্য। সম্পূর্ণ বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতেও জানতে হলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো। আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আশা করছি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খেলে কি হয়
নিম পাতার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। নিম পাতার মধ্যে প্রাকৃতিক বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। যা আমাদের স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য দরকারি। নিম পাতা সরাসরি চিবিয়ে খাওয়া যায় আবার নিম পাতা রস করেও খাওয়া যায়। আপনি যেভাবে ইচ্ছে খেতে পারবেন। তবে নিম পাতার রস করে খেলে সর্বোত্তম ফলাফল পাওয়া যাবে। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে নিমপাতার রস খান তাহলে আপনার রোগব্যাধি অনেক কম হবে।
আপনারা অনেকেই হয়তো নিম পাতার রসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানেন না। যদি জানতেন তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন সকালে নিম পাতা রস করে খেতেন। চিন্তার কিছু নেই এখন আমরা নিম পাতার রসের উপকারিতা সম্পর্কে জানব। প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খেলে কি কি উপকার হয় নিচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আকারে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: গবেষণায় দেখা গেছে যে নিম পাতার রসে মিটানোস, ই-ফ্যাকালিস ও এস-অরিয়াশ এর মত উপাদান রয়েছে। এ সকল উপাদান আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। অর্থাৎ প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে নিম পাতার রস খেলে উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা সমাধান হবে। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খেলে উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খেলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
হরমোনের মাত্রা: নিম পাতার রস আমাদের শরীরের হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খেলে আমাদের শরীরের হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। শরীরের হরমোনকে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেতে দেয় না। হরমোন কে সুস্থ ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম পাতার রস খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। এছাড়াও সকালে নিম পাতার রস খেলে হরমোনের স্বাভাবিক কার্যক্রম অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। তাই হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ও হরমোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস খাওয়া প্রয়োজন।
পেটের সমস্যা: প্রতিদিন সকালে নিমপাতার রস খেলে বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যাদের পেটের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত সকাল বেলা নিম পাতার রস করে খেলে পেটের যত বড় সমস্যায় থাক না কেন সেটা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। নিম পাতার রস আমাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। নিম পাতার রস রোগ-ব্যাধি প্রতিরোধ করতে পারে এবং আমাদের পেটকে ক্ষতিকর রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ক্লান্তিবোধ দূর করে: নিয়মিত সকাল বেলা নিম পাতার রস খেলে শরীরের ক্লান্তি বোধ দূর হয়। সারাদিন বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করার ফলে আমাদের শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সেই ক্লান্তিবোধ নিয়েই রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে এই ক্লান্তিবোধ দূর করতে চাইলে এক গ্লাস নিমপাতার রস করে খেতে পারেন। সেই সাথে নিম পাতার রস শরীরে নতুন করে এনার্জির সৃষ্টি করে। যার ফলে কর্মক্ষমতা ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। সেজন্য প্রতিদিন সকালবেলা নিম পাতার রস খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়
আমরা সকলেই কমবেশি নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানি। নিম পাতা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিম পাতা যেমন সরাসরি ও রস করে খাওয়া যায়। ঠিক তেমনি নিমপাতার বড়ি তৈরি করেও খাওয়া যায়। নিম পাতার বড়ি তৈরি করে খেলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করা যায়। নিম পাতার বড়ি বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। নিম পাতার বড়ি একবার তৈরি করেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়। যা আপনি চাইলে দীর্ঘ সময় ধরে খেতে পারবেন। এছাড়াও নিম পাতার বড়ি বানিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
নিম পাতার বড়ি আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে গিয়ে শরীরের কোষগুলোকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তুলবে। সেই সাথে নিম পাতার বড়ি খেলে খুব সহজেই অনেক ধরনের রোগকে নিরাময় করা যাবে। নিম পাতার বড়ির গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না। নিচে নিম পাতার বড়ি খেলে কি কি উপকার হয় তা সম্পর্কে পয়েন্ট আকারে উল্লেখ করা হলো:
- পেট ফাঁপা নিরাময় করে
- পেটের গ্যাস নিয়ন্ত্রণে রাখে
- উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করে
- শরীরের ক্লান্তিবোধ দূর করে
- শরীরের ভেতরের রোগ জীবাণু ধ্বংস করে
- শরীরের কোষগুলোকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে
- রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে
- উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে দেয় না
- পেটে আলসার হওয়া থেকে অনেকাংশেই রেহাই দেয়
- শরীরের জ্বর জ্বর ভাব দূর করে
- সর্দি কাশির জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে
- পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে
নিম পাতা বেটে মুখে দিলে কি হয়
আমরা সবাই জানি নিমপাতা আমাদের স্বাস্থ্য ও ত্বক উভয়ের জন্যই অনেক উপকারী। নিমপাতা যেমন খাওয়া যায় ঠিক তেমনি নিম পাতা বেটে আমরা আমাদের মুখেও ব্যবহার করতে পারব। নিম পাতা বেটে মুখে ব্যবহার করলে মুখের নানা রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সর্বোপরি কম বেশি আপনারা সকলেই জানেন নিমপাতা আমাদের স্কিনের জন্য অনেক উপকারী ।
আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী নানা উপাদান নিম পাতার মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে । অনেক মানুষের মুখেই নানা ধরনের সমস্যা দেখতে পাওয়া যায়। আপনাদের সমস্যার কথা চিন্তা করে আজকে আমরা আলোচনা করব নিম পাতা মুখে বেটে দিলে কি কি উপকার পাওয়া যায়। নিচে বিস্তারিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আকারে আলোচনা করা হলোঃ
ব্রণ দূর হয়ঃ জীবনে কখনো মুখে ব্রণ হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রতিটা মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মুখে ব্রণের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই ব্রণ নিরাময়ে নিমপাতার প্রয়োজনীয়তা অনেক। নিম পাতা বেটে মুখে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা দূর হয়। যাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ রয়েছে
তারা নিয়মিত নিম পাতা বেটে তাদের মুখে ব্যবহার করলে ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়াও নিম পাতা ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করতে পারে। তাই আপনি যদি ব্রণ মুক্ত সুন্দর চেহারা পেতে চান তাহলে নিয়মিত নিম পাতা বেটে মুখে ব্যবহার করতে পারেন।
মুখের দাগ দূর হয়ঃ অনেক মানুষের মুখেই কালো কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। মুখে কালো কালো দাগের জন্য অস্বস্তি বোধ হয়। নিম পাতা মুখের কালো দাগ দূর করতে পারে। নিয়মিত নিম পাতা বেটে মুখে ব্যবহার করলে মুখের কালো দাগ দূর হবে। নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। যা মুখের রোগ জীবাণু ধ্বংস করে।
এছাড়াও মুখের বিভিন্ন ধরনের দাগ ও নিরাময় করে। তাই মুখের কালো দাগ দূর করতে চাইলে নিমপাতার জুড়ি মেলা ভার। যাদের মুখে কালো কালো দাগ রয়েছে তারা নিয়মিত নিম পাতা বেটে মুখে দিলে মুখের কালো কালো দাগ দূর হবে।
মুখে গর্ত হওয়া প্রতিরোধ করেঃ মুখে অতিরিক্ত ব্রণ হওয়ার কারণে মুখের মধ্যে গর্তের সৃষ্টি হয়। নিম পাতা মুখে গর্ত হওয়া প্রতিরোধ করে। যাদের মুখে ব্রণের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত নিম পাতা বেটে মুখে দিলে মুখে গর্তের সৃষ্টি হবে না। নিম পাতায় এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বককে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
তাই নিয়ম করে মুখে নিম পাতা বেটে লাগালে মুখে ব্রণ হলেও মুখে গর্ত সৃষ্টি হবে না। এছাড়াও নিমপাতা মুখের ছোট ছোট গর্ত পূরণ করতেও সহায়তা করে। তাই যাদের মুখে ব্রণের প্রভাবে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তারা নিয়মিত নিমপাতা বেটে মুখে লাগাতে পারেন।
মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ায়ঃ নিম পাতা মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সহায়তা করে। এছাড়াও নিম পাতা বেটে মুখে লাগালে মুখের মসৃণতা ও রুক্ষতা দূর হয় । নিয়ম করে বেশ কিছুদিন নিম পাতা বেটে সেটা মুখে ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে মুখের উজ্জ্বলতা আগের তুলনায় অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।
নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতা আমাদের জন্য অনেক অনেক উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ঠিক তেমনি নিম পাতা আমাদের ত্বকের জন্যও উপকারী। নিম পাতার মধ্যে প্রাকৃতিক নানা গুণাগুণ রয়েছে। তাই নিমপাতা ব্যবহার করলে আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হবে। আপনারা হয়তো অনেকেই নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে সঠিকভাবে তেমন কিছুই জানেন না। যদি জানতেন তাহলে অবশ্যই নিমপাতা নিয়মিত ব্যবহার করতেন। আজকের আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনাদের সমস্যা সমাধান করার জন্যই লেখা হয়েছে।
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনি নিমপাতার নানা উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। যদি আপনি নিমপাতার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনি যদি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্রতিনিয়ত নিম পাতা ব্যবহার করবেন। নিম পাতার নানা উপকারিতা সম্পর্কে নিচে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট আকারে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
হজমশক্তি বৃদ্ধিঃ নিম পাতার রস করে খেলে বা সরাসরি নিমপাতা চিবিয়ে খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। যাদের হজমশক্তি দুর্বল প্রকৃতির অর্থাৎ কোন খাবার খেলে সেটা সহজেই হজম হতে চায় না তারা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইলে নিম পাতা খেতে পারেন। নিয়মিত নিম পাতা খেলে আপনার হজম শক্তি আগের তুলনায় অনেক অনেক বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও নিম পাতা আমাদের হজম তন্ত্রের জন্য বা পাকস্থলীর জন্য অনেক উপকারী।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ নিম পাতার রস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন নিম পাতার রস করে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে নিম পাতার রস খেলে ইনসুলিন নেওয়ার তেমন প্রয়োজন পড়ে না। নিম পাতার মধ্যে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের এক ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে। যার ফলে নিম পাতা রস করে খেলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্যঃ নিম পাতা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করতে পারে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা রয়েছে তারা নিয়ম করে প্রতিদিন নিম পাতা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। এছাড়াও নিম পাতা আমাদের পেট পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত নিম পাতা খেতে পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করা যায়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ নিম পাতা খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। প্রতিদিন নিয়ম করে নিম পাতা চিবিয়ে খেলে বা নিম পাতার রস করে খেলে আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং কোলেস্টরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে না। সেজন্য কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিম পাতার কোন বিকল্প নেই।
ব্লাড সুগার কমায়ঃ নিম পাতা খাওয়ার ফলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিম পাতা আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে দেয় না। ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে। যারা অতিরিক্ত ব্লাড সুগারে ভুগছেন তারা নিয়মিত নিম পাতা খেতে পারেন তাহলে ব্লাড সুগার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
আমরা আগেই জেনেছি নিম পাতা আমাদের ত্বকের জন্য অনেক দিক থেকেই উপকারী। শরীরে নিম পাতা বেটে ব্যবহার করলে নানারকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অনেক মানুষের শরীরেই চুলকানি হয়। চুলকানি প্রতিরোধ করতে নিম পাতার গুরুত্ব অনেক। কারণ নিম পাতার মধ্যে রয়েছে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল নানা উপাদান। যা আমাদের শরীরের ক্ষতিকর রোগ জীবাণু গুলোকে ধ্বংস করে। শরীরের চুলকানি হয় কিছু ক্ষতিকর রোগ জীবাণুর প্রভাবে।
তাই চুলকানি হলে সেই স্থানে নিম পাতা বেটে লাগিয়ে নিলে চুলকানি নিরাময় করা যায়। তাছাড়া শরীরের কয়েকদিন পরপর নিম পাতা বেটে সেটা লাগিয়ে নিলে চুলকানির সমস্যা থেকে রেহাই মিলবে। অনেকের শরীরে প্রচুর পরিমাণে এলার্জির সমস্যা রয়েছে। যার কারনেও শরীর অনেক চুলকায়। নিম পাতা এলার্জির সমস্যাও নিরাময় করতে পারে । যাদের অ্যালার্জি জনিত চুলকানি রয়েছে
তারা শরীরে নিম পাতা বেটে সেটা দিলে চুলকানির সমস্যা রোধ করা যাবে। অতএব চুলকানির সমস্যা সমাধানে নিম পাতার ব্যবহার অপরিসীম । আপনারা যারা চুলকানিতে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন তারা নিম পাতা বেটে শরীরে ব্যবহার করলে চুলকানির সমস্যা কে প্রতিরোধ করতে পারবেন এবং চুলকানি থেকে রেহাই পাবেন।
নিমপাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে শরীরের জন্য অনেক উপকার হয়। আমরা সারাদিন বাহিরে কাজকর্ম করে থাকি। যার ফলে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়। সেই ঘাম থেকে বিচ্ছিরি রকমের দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করে। সারাদিনের কাজকর্ম শেষে নিম পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করলে ঘামের সেই বিচ্ছিরি গন্ধ শরীর থেকে দূর হবে। সেই সাথে শরীরে লেগে থাকা রোগ জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে। নিম পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর থেকে এক ধরনের গন্ধ বের হয়।
যার প্রভাবে আমাদের শরীরে রোগ জীবাণু কম আক্রমণ করতে পারে। তাছাড়া নিমপাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা দূর হয়। শরীরে এনার্জির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। নিম পাতা হল ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন। যার ফলে গোসলের পানিতে কিছুটা নিম পাতা মিশিয়ে নিলে শরীরের বাহ্যিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যাদের ত্বকে নানারকম সমস্যা রয়েছে। তারা এই নিম পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
এছাড়াও নিম পাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করলে সারাদিনের ক্লান্তিবোধ দূর হয়, মেজাজ খিটমিটে হওয়া থেকে বিরত থাকে। অনেক মানুষের শরীরেই লাল লাল রেস বের হয়। তারা চাইলে নিমপাতা মেশানো পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। তাহলে তাদের শরীরের লাল লাল রেশ নিরাময় হবে। নিম পাতা অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। যাদের ত্বকে ঘা বা ইনফেকশন জনিত সমস্যা রয়েছে তারা নিমপাতা দিয়ে গোসল করলে শরীরের ইনফেকশন বা ঘা থেকে রক্ষা পাবে।
লেখক এর মন্তব্য নিম পাতার উপকারিতা
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আমরা আর্টিকেলের একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আমরা বিস্তারিতভাবে নিম পাতার বৃষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে তথ্যমূলক আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সমস্ত বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে ও জানতে পেরেছেন। আপনি যদি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার পরিবার ও নিজের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি যদি এমন আরো শিক্ষামূলক আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করতে পারেন। আমরা প্রতিনিয়ত এমন শিক্ষামূলক ও তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে আপনার পরিচিতজনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করতে পারেন।
আসিফ টেক আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url